নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বিএনপির

Spread the love


অনলাইন ডেস্ক॥
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দেশের এমন পরিস্থিতিতে দলটির মাঝে নানা শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এমন বাস্তবতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বএনপি। দলটির নেতাদের দাবি, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের লোকেরা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা মনে করেন, সরকার এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত আমলে নিয়ে সরকার চালালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলটির নেতাদের আলোচনায় এই পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে। বৈঠকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে বিএনপির লিখিত প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আগে তুমুল বিতর্ক হয়। শেষ পর্যন্ত কয়েকটি বিষয়ে সংশোধন এনে প্রস্তাব পাস করা হয়।
সাম্প্রতিককালের নৈরাজ্যের বিষয়ে বিএনপির বিশ্লেষণ হচ্ছে, সরকার শুরু থেকে নৈরাজ্যের বিষয়ে কঠোর ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে
তাদের নমনীয়তা বর্তমান নৈরাজ্যের অন্যতম কারণ। এ ধরনের চক্রান্ত ও সহিংস অবস্থা তৈরি হতে পারেÑ এমন শঙ্কা থাকার পরও সরকার শক্ত হাতে দমন করেনি। ফলে এখন একটি বিপর্যকর অবস্থা তৈরি হয়েছে।

তাদের আরও পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সরকার সেভাবে তা আমলে নেয়নি। প্রশাসনে এখন আওয়ামী লীগের লোকেরা ‘শক্ত’ অবস্থানে আছে। নেতাদের মতে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দোসরদের’ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসিয়ে রাখলে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, তা নিয়ে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল।

সোমবার রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে কোনো নেতা তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নেতা বলেন, সরকার সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে মনোনিবেশ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিলে পরিস্থিতি এ রকম হতো না। নির্বাচন দিতে যত দেরি হবে, এ ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ততই বাড়বে।

এমন বাস্তবতায় বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং পরিস্থিতি উত্তরণে কী করা উচিত, সে বিষয়ে বিএনপি প্রধান উপদেষ্টার কাছে কিছু পরামর্শ তুলে ধরবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার শুরুতে সংবিধান সংস্কার নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে নেতাদের মধ্যে বিতর্ক হয়। স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেন, সাধারণত কোনো প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তার ওপর অন্য সদস্যদের মতামতের পর সংযোগ-বিয়োজন করে তা পাস করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংবিধানে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রী পদ সৃজনসহ ৬২টি সংস্কারসংবলিত লিখিত প্রস্তাব জাতীয় সংসদ ভবনে গিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দেয় বিএনপি। জমা দেওয়ার পর বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষা এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদের রক্তের অঙ্গীকার, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যাতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র সৃষ্টি না হয়, সেগুলো মাথায় রেখে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours