যেসব আমলে শয়তান পালিয়ে যায়

Spread the love


অনলাইন ডেস্ক॥

শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। শয়তান মানুষকে গোমরাহ ও বিপথগামী করার প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই দুনিয়াতে এসেছে। এ চ্যালেঞ্জ থেকেই শয়তান মানুষকে নানাভাবে ধোঁকা, প্রতারণা, প্ররোচনা ও ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। এসব ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কাজ। হাদিসের অসংখ্য বর্ণনায় শয়তানের ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকার আমল ওঠে এসেছে। এমনকি এমন অনেক আমল আছে যার প্রতিক্রিয়ায় শয়তান ও বদ জিন ভয়ে মানুষ থেকে পালিয়ে যায়। সেসব আমলগুলো কী?
১. নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (প্রতিদিন) সকাল ও বিকালে আয়াতুল কুরসি ১ বার পড়বে; ওই ব্যক্তি সারাদিন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবেন।’ (তারগিব)
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পড়বে শয়তান সারা রাত তার কাছে যাবে না।’ (বুখারি)
৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যেসব ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় ৩বার পড়বে-

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়া লা ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’

অর্থ : ‘আল্লাহর নামে; যাঁর নামের সঙ্গে আসমান ও জমিনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।’

তাহলে (বদ-জিন ও শয়তানসহ) কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।; (আবু দাউদ)

৪. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পেশাব-পায়খানার স্থানে জিন শয়তান থাকে। অতএব তোমাদের কেউ যখন সেখানে যায়; সে যেন বলে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبائِث

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবছি ওয়াল খাবায়িছ।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে অপবিত্র পুরুষ জিন ও নারী জিন থেকে আশ্রয় চাই।’ (ইবনে হিব্বান, বুখারি, মুসলিম)

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো গর্তে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন; কারণ গর্ত হল জিনদের থাকার জায়গা।’ (আবু দাউদ)

৫. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সুরা ইখলাস, ফালাক, এবং নাস ৩ বার পড়বে; এ আমলই তার সবকিছুর (অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাকার) জন্য যথেষ্ট হবে।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

শিশুদের জিন-শয়তান থেকে নিরাপদ রাখতে

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সন্ধ্যার সময় তোমাদের সন্তানদের বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখবে। কারণ, তখন জিন-শয়তান (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ে।’ (বুখারি)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে হজরত হাসান ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্য এভাবে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন-

أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ

উচ্চারণ : উয়িজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়ত্বানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’

‘আমি তোমাদের দুইজনকে আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয়ে নিচ্ছি- যাবতীয় শয়তান ও বিষধর জন্তু থেকে এবং যাবতীয় ক্ষতিকর চোখ (বদনজর) থেকে।’ (বুখারি)

এমনকি শয়তান নারী-পুরুষের সন্তান জন্মদানের সময় তথা সহবাসের সময়ও ক্ষতি ও ধোঁকা-প্ররোচনা দিয়ে থাকে। সে সময় শয়তান-জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার কথা এসেছে হাদিসে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করে সহবাস করলে-

بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’

অর্থ : ‘আল্লাল্লাহর নামে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন এবং আমাদের আপনি যে সন্তান দান করবেন তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখুন।’

এ দোয়া পড়ার পর ওই সহবাসের ফলে সৃষ্ট সন্তানের কোনো ক্ষতি করতে পারে না জিন-শয়তান।’ (বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শয়তানের আক্রমণ, ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকতে হাদিসের ওপর আমল করা। যারাই নিয়মিত লাহ আমাদের প্রতিটি দিন শুভ ও নিরাপদ করে দিন। সূত্র: আমাদের সময় অনলাইন।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours