অনলাইন ডেস্ক॥
সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ ২৯) ফাঁকে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হবে। তবে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায়, তার ওপর পুরো বিষয়টা নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার ওই ভিডিও সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করেছে আল-জাজিরা। সাক্ষাৎকারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ যেসব সংকট মোকাবিলা করছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি বাংলাদেশে চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়া, আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে আল-জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।
তিনি আরও বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটা করা হবে।
তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমি তা বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।
চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সরকারব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটো প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে-নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে সাক্ষাৎকারে। প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য উপকারী নয়। তাই ভারতের কাছে তারা এসব বিষয়ে বলছেন। তাকে আশ্রয় দিচ্ছে, ঠিক আছে। কিন্তু এমনটা হতে থাকলে তাদের কাছে আবার অভিযোগ করা হবে।
১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দেওয়া এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাক্ষাৎকারে বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। এমনকি ভারতও তাঁকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছে। সুতরাং আশ্রয়দাতাও তাঁকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কিছু বলছে না।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আইনি প্রক্রিয়া চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হবে।
+ There are no comments
Add yours