রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস ॥ শীতের বিদায়ের সময় আর বসন্তের শুরুতে শিমুলের লাল পাপড়িতে নতুন করে সাজে আমাদের প্রকৃতি। অপরূপ রূপ পায়- গ্রামবাংলার পথঘাট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই চিরচেনা রূপ অনেক ক্ষেত্রেই আজ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। বছর দশেক আগেও জেলার গ্রামগঞ্জে বাড়ির পাশে, রাস্তার পাশে দেখা যেত। এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না এই রক্তলাল শিমুল গাছ।
প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ও বেড়ে ওঠা এই সৌন্দর্য মানুষ উজাড় করে দিয়েছে দিনে দিনে। জানা গেছে, একসময় এই গাছ ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়েছে প্যাকিং বাক্স তৈরিতে। ইটভাঁটার জ্বালানি হিসেবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি নতুন শিমুল গাছের চারা।
শুধু সৌন্দর্য নয়, শিমুলগাছ স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এমনটাই জানা গেলো অনলাইন জগত ঘুরে। ‘শিমুলগাছ একদিকে যেমন প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে অন্যদিকে পক্ষীকুলের ভালো আবাসস্থল এই শিমুলগাছ। এই গাছ কমে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের পাখি তাদের বাসা তৈরি করতে পারছে না।’ ফলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জীব জগতের উপর এর একটা প্রভাব পড়ছে।
এই গাছ অনেক উঁচু হওয়ায় কাক, কোকিল, চিল, বকসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি বাসাবেঁধে বসবাস করত।
শীতের শেষে শিমুলগাছের পাতা ঝরে যায়। বসন্তের শুরুতে ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে এর ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে বাতাসে ভেসে যায়। যেখানে পড়ে সেখানেই চারা জন্মায়। অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে লাগায় না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। চোখের আড়ালেই বেড়ে ওঠে।
অনেকের মতে, নদীর ধারে ব্যাপকভাবে শিমুলগাছ বেড়ে উঠতো। শিল্পায়নের ফলে এসব গাছ কমে গেছে। এর অন্যতম কারণ হলো শিমুলগাছ কেটে ফেলা আর বীজ বপন না করা। শিমুল ফুল প্রকৃতিতে লাল আভা ছড়ায়। শিমুল কমে যাওয়ায় প্রকৃতিও তার রঙ হারাচ্ছে। গ্রামের প্রকৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত হবে ব্যাপক হারে শিমুলগাছ লাগানো।’
শিমুলগাছের রয়েছে নানা রকম উপকারিতা ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব। প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুলগাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনও নানা রোগের চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করেন।
জানা যায়, ‘শিমুলগাছ পরিবেশ বিশুদ্ধ করে। শিমুলগাছ থেকে আমরা প্রাকৃতিক তুলো পেয়ে থাকি। এই গাছ না থাকায় এখন আমরা কৃত্রিম তুলা ব্যবহার করছি।
+ There are no comments
Add yours