নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বণিকেরা বড় বড় নৌকায় করে ভোগ্যপণ্য এনে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নিতাইগঞ্জে বিক্রি করতেন। শুরুতে ছিল সাপ্তাহিক হাট। ধীরে ধীরে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসা শুরু হয়। ২০০ বছর আগে শুরু হওয়া নিতাইগঞ্জকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল ঢাকার মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতোই জমজমাট। তবে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি ও বড় শিল্প গ্রুপগুলো ভোগ্যপণ্য উৎপাদনে এলে নিতাইগঞ্জের জৌলুশ কমে যায়। দৈনিক ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন কমে এখন দাঁড়িয়েছে আড়াই শ কোটি টাকায়।
একসময় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের পাট দেশের বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হতো। এ কারণে এই শহরকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলে অভিহিত করা হয়। সুলতানি আমলে সোনারগাঁ যখন বাংলার রাজধানী, তখন শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড়ের কদমরসুল, মদনগঞ্জ ব্যবসা–বাণিজ্যের জন্য সমৃদ্ধিশালী এলাকা। ১৮৬২ সালে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নতি সাধিত হয় স্টিমার সার্ভিস চালু হওয়ার পর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিতাইগঞ্জ বর্তমানে আটা-ময়দা, ডাল, তেল, চিনি, লবণ, গোখাদ্যসহ বিভিন্ন মালের পাইকারি ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ। একসময় এখানে উৎপাদিত ভোগ্যপণ্য দেশের ৪০টি জেলায় সরবরাহ করা হতো। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতিসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমানে বরিশাল, সিলেট, ফরিদপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ ১০-১২টি জেলায় নিতাইগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ভোগ্যপণ্য সরবরাহ করা হয়। নিতাইগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭২টি আটা-ময়দার মিল রয়েছে। ১০০টির বেশি চালের আড়ত, ৫০টির মতো গমের আড়ত, ডালের আড়ত ১০০টি, লবণের ৫০টি, তেল-চিনির প্রায় ৪০০টি, ময়দার ৬৮টি, ছোট–বড় মিলিয়ে ভুসি মালের সহস্রাধিক আড়ত রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours