অনলাইন ডেস্ক॥
লিচুর মৌসুমে ৬ কোটি টাকার মধু বিক্রির সম্ভাবনার কথা জানালেন মধু সংগ্রকারীরা। মুলত ঈশ্বরদী হলো লিচুর জন্য বেশ প্রসিদ্ধ। আর এ সময়ে লিচু মুকুল থেকে মধু আহরণের জন্য ঈশ্বরদীতে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ মৌচাষি বাগানে বাগানে মৌমাছির খামার গড়ে তুলেছেন। ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু মুকুল থেকে মধু আহরণের মাধ্যমে। ঈশ্বরদীর লিচুপ্রধান এলাকাগুলো হলো মানিকনগর, মিরকামারী, বক্তারপুর, জয়নগর, ছিলিমপুর, সাহাপুর, বাঁশেরবাদা। এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা এসে তাদের মৌ-খামার লিচু বাগানের ভেতরে রাখছেন। মৌচাষিরা প্রতিটি লিচুগাছের চারপাশ ঘিরে মৌমাছির বাক্স সাজিয়ে রাখেন। সেখান থেকে মৌমাছি লিচু মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করে ওই নির্দিষ্ট বাক্সে মধু জমা করছে। এরপর মৌচাষিরা মধু সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছেন। ভ্রাম্যমাণ মৌচাষি আলাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, তার বাড়ি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে। গত ১৬ বছর ধরে লিচুর মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মধু আহরণের জন্য অস্থায়ী মৌ-খামার নিয়ে আসেন তিনি। তার খামারে প্রায় ২শটি মৌমাছির বাক্স রয়েছে। এ বছর মার্চ ও এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ ধরেই লিচু মুকুল থেকে মধু আহরণ কার্যক্রম চলছে। মৌসুমে তার অস্থায়ী মৌ-খামার থেকে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন মধু আহরিত হবে বলেও জানান তিনি। অপর এক মৌচাষি জানান, জীবিকার তাগিদে এ কাজ বেছে নিয়েছেন। তাদের আহরিত মধু গুণগত মানে উৎকৃষ্ট। এই দেশের অনেক বিখ্যাত ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রয় করে। তারা জানান, প্রতি বাক্স মৌমাছির দাম প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। প্রতি বাক্সে গড়ে ১০ কেজি করে মধু আহরিত হয়। তারা আরও বলেন, অস্থায়ী মৌ-খামারের আশপাশের প্রায় ২ কিলোমিটার পর্যন্ত বাগান থেকে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করতে পারে। জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলার প্রায় ৩০০ ভ্রাম্যমাণ মৌ-খামার বিভিন্ন বাগানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। প্রতি মৌ-খামার থেকে ২ থেকে ৩ টন মধু আহরণ হবে বলে জানান মৌচাষিরা। সে হিসাবে ঈশ্বরদীতে এবার চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ কোটি টাকার মধু বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই ভাবছেন মৌচাষি ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে লিচু চাষিরা জানান, প্রতি বছরই তাদের বাগানে লিচুর মৌসুমে মধু আহরণের জন্য ভ্রাম্যমাণ মৌ-খামারিরা আসেন। বাগানে লিচু মুকুলে মৌমাছি ঘুরে বেড়ানোয় পরাগায়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বেশ উপকৃত হন। এজন্য তারা অতিথি হিসেবেই ভ্রাম্যমাণ মৌ-চাষিদের সহযোগিতা করেন।
+ There are no comments
Add yours