ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডিবি পরিচয়ে ৩৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলা এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডার হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. এনায়েত উল্লাহর ও দক্ষিণ পৈরতলা এলাকার রশিদ মিয়ার ছেলে মো. আকাশ মিয়া। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন। তিনি জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম ও ডিবি পুলিশ মাঠে নামে। পরে ভোর রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার পুলিশ ঘটনায় মূল হোতা এনায়েত উল্লাহকে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদী এলাাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এনায়েত উল্লার কাছ থেকে ২ হাজার ইউরো উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাড়ির চালক মো. আকাশ মিয়াকে জেলা শহরের পৈরতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত কালো রঙ্গের হাইয়েস মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়।
তিনি আরো জানান, ছিনতাইকারীরা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের নৈশ প্রহরী এরশাদের মাধ্যমে মাইক্রোবাসটি ঠিক করে। আসামিরা ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের পূর্ব পরিচিত। প্রধান আসামি মো. এনায়েত উল্লাহ এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায় বসবাস করতেন। তারা আগে থেকেই জানতেন ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী কাছে হুন্ডিসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর টাকা থাকে। ছিনতাইকারীরা তাদের সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়, ফজলুল হক টাকা নিয়ে কখন বের হবেন। এই তথ্য অনুযায়ী তারা আগে থেকে উৎপেতে থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায়। পুলিশ বাকী দুই আসামি গ্রেফতারসহ বাকি টাকা উদ্ধারে অভিযান চালাছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পূর্ব পাইকপাড়া জামে মসজিদ রোড এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৩৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগি ফজলুল হক জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামের আলী আহাদের ছেলে। ফজলুর রহমান ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী। সে জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
ছিনতাইয়ের শিকার ফজলুর রহমান জানান, বুধবার সকালে বাসা থেকে জমি বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য রিকসা যোগে তিনি রওনা দেন। বাসার একটু সামনে পূর্ব পাইকপাড়া জামে মসজিদ রোড (আসিফ টিউটোরিয়াল এন্ড হাই স্কুল) সামনে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা কালো রঙ্গের একটা হাইয়েস মাইক্রোবাসে থাকা তিন জন আমার রিকসা গতিরোধ করে। পুলিশের ড্রেস পড়া একজন ও বাকী দুজন তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার নাম জানতে চাই। নাম বলার সাথে সাথে তারা বলে আমার সাথে অবৈধ জিনিস আছে বলে জোড় করে গাড়িতে তোলে। আমি না উঠতে চাওয়াতে তারা আমাকে বেদড়ক মারধর শুরু করে। আমি চিৎকার করলেও পাশে থাকা অনেক লোক কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে আমার সাথে থাকা ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার ব্যাগসহ তারা আমাকে গাড়িতে তোলে নিয়ে যাই। পরে আমারে অনেক ভয় ভীতি দেখিয়ে জেলা শহরের পীরবাড়ি এলাকার একটু সামনে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেই। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।
+ There are no comments
Add yours