নির্বাচনী জরিপ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন|| সংগ্রাম-সুখনের লড়াই

Spread the love

দেলোয়ার আহমাদ::
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, চাঞ্চল্য এবং সক্রিয় তৎপরতার মধ্য দিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী কার্যক্রম প্রার্থী, ভোটার, বিশ্লেষক এবং আলোচকদের মধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা বিগত বেশ কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আয়োজনে লক্ষ্য করা যায়নি।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিটিং, মিছিল, মাইকিং আলোচনা সভা, চায়ের আড্ডায় এখন ব্যস্ত শহর ও গ্রামের প্রতিটি জনপদ। অলি-গলি, মাঠ-প্রান্তর, জমির আইল সর্বত্রই প্রতিদ্বন্দ্বী ও ভোটারদের কর্ম চাঞ্চল্যে মুখরিত। বিগত প্রায় ৫০ বৎসরের কোন সংসদ নির্বাচনী আয়োজনেই বাস্তবে এমনটি লক্ষ্য করা যায়নি। “আমরা যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারি, তবে কোন ফ্যামিলিই সেদিন ঘরে বসে থাকবে না বলে মনে হয়।কারণ সবাই তার ভোটটি প্রয়োগ করতে চায়, বিধায় এবার ভোট কেন্দ্রে সবার উপস্থিতি দেখতে পাবেন।” কলার ছড়ির সমর্থক, ঔষধ ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ এ কথা বললেন। “ এখন শংকা হচ্ছে, আমরা ভোট কেন্দ্রে নিরাপদে যেতে পারবো কি-না। দেখছেন তো ভোটারদের অদম্য প্রেরণা আর উৎসাহ, সবাই কলার ছড়ি।” বললেন সদর পশ্চিম পাড়ার রিক্রাাচালক আলী আকবর। “পরিবারের সবাই এখন আকুল আগ্রহে প্রস্তত তার ভোটটি নৌকা মার্কায় দেয়ার জন্য।” বললেন কুন্ডা ইউনিয়নের রেখা রানী বিশ^াস।

অত্র জরিপে আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সরেজমিন জরিপে নাসিরনগরের ১৩টি ইউনিয়নের ভোটারদের মধ্যেই আমাদের (ঊঈঅই) ঊহমষরংয ঈড়ৎৎবংঢ়ড়হফবহঃ অংংড়পরধঃরড়হ ড়ভ ইৎধযসধহনধৎরধ-এর প্রতিনিধি দল মাঠ ঘুরে ভোটারদের মতামত সংগ্রহ করতঃ তাদের মানসিকতার প্রতিফলন তুলে ধরেছে। আলোচনায়, ভোটারদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং তাদের মনের বিশ্লেষনী চিন্তাই আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ধারাবাহিকভাবে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জরিপ, যা ভোটারদের কাছ থেকে, তাদের মুখ থেকে সংগৃহীত হয়েছে, সেটিই আমরা তুলে ধরছি।

নাসিরনগরের ১৩টি ইউনিয়নে আমাদের তিনটি প্রতিনিধি দল যেখানেই গিয়েছে, ভোটারদের সাথে প্রত্যক্ষ সাক্ষাতে যা পেয়েছে, তার এখন পর্যন্ত বর্তমান অবস্থায় চিত্র তুলে ধরেছে। কৃষক, শ্রমিক সর্বস্তরের মানুষই বলছেÑপ্রতিযোগীতা কেবল মাত্র দ্বি-মুখীই হবে। মোট চারজন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টি এবং ইসলামীর আন্দোলনের প্রার্থীদের প্রতিযোগী অবস্থান কোথাও লক্ষ্য করা যায়নি। এমতাবস্থায়, সর্বত্রই দুইজন প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প, কর্মতৎপরতা এবং কর্মী সমাবেশ লক্ষ্য করা গেছে। আশার কথা, পাশাপাশি মিছিল, মাইকিং এবং ক্যানভাস, তর্কাতর্কি সত্ত্বে ও কোন উত্তেজনা পরিলক্ষিত হয়নি। সর্বত্রই ব্যাপক নির্বাচনী উৎসব, আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। মনে হয়েছেÑসে যেন এক দু’টি ফুটবল টিমের দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ খেলা চলছে, দর্শক ও শিহরিত মনোভাব নিয়ে সে খেলা উপভোগ করছে। কোথাও কোনো নির্বাচনী সংঘর্ষ বা এ ধরনের দুঃসংবাদের কথা জানা যায়নি। মোটকথা, নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, তা-ই লক্ষ্য করা গেছে সর্বত্র। তাছাড়া, আমাদের প্রথম জরিপে এতো শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী আমেজ এবং তুমুল নির্বাচনী তৎপরতা আমরা ধরেই নিয়েছিলাম না। সেভাবে পাঠকদের উদ্দেশ্যে একথা বলা যায়, ঐতিহাসিক, শান্তিপূর্ণ এবং উত্তেজনাময় নির্বাচনী পরিবেশই নাসিরনগরের আপামর জনগণ তৈরী করেছে, যা সরেজমিন প্রত্যক্ষ না করলে বুঝা মুশকিল।

যেকথা এখন আসছেÑপ্রার্থীদের অবস্থান কি? সরেজমিন উপস্থিতিতে আমাদের পর্যবেক্ষণÑনাসিরনগরে দ্বি-মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হচ্ছে, যা নৌকা এবং কলার ছড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ। দু’একটি ইউনিয়ন অর্থাৎ গোকর্ণ এবং সদর ইউনিয়ন ব্যতীত সর্বত্রই ভোটের একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে, যেখানে কলার ছড়ির প্রার্থী সৈয়দ একরামুজ্জামান সুখনের পক্ষে ৬০% এর ও বেশী ভোটারের সমর্থন, বাকী সবটাই নৌকা প্রতীকের জনাব বি, এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম সাহেবের পক্ষেই। অন্যান্য বাকীসব প্রার্থীরা কত পার্সেন্ট ভোট টানতে পারবেন, মনে হয় না সেটা কোন পার্সেন্টের মধ্যে পড়বে। যা হোক, বর্তমান পরিস্থিতির এই শান্তিপূর্ণ অবস্থান এবং ভোটের গতি যদি কোন কারণে মোড় নেয় সেটি ভিন্ন জিনিস। কারণ, ভোটে এবং রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। অনেক সময় দেখা যায় শত্রু-মিত্র জোট বেঁধে বসেছে এবং পুরো পরিস্থিতিই পাল্টে যায় সেক্ষেত্রে। সুতরাং, আমাদের কথা, আমরা যা পেয়েছি সরেজমিনে, সেটিই তুলে ধরেছি। সবশেষে, ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতিটি নির্বাচনী আসনের চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরার প্রত্যাশা ব্যক্ত করার আশা রাখছি।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours