অশোকা ফেলো এবং একজন ড. মাতিন আহমেদ এর কথা

Estimated read time 1 min read

ইদরীস মুহাম্মদ॥

অশোকা যেটি পূর্বে অশোকা: ইনোভেটরস ফর দ্য পাবলিক নামে পরিচিত। এটি একটি আমেরিকান-ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা যা ব্যক্তিগত সামাজিক উদ্যোক্তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন এবং সহায়তা করার মাধ্যমে সামাজিক উদ্যোক্তাদের প্রচার করে থাকে। অশোকা বিশ্বব্যাপী ৯০ টিরও বেশি দেশে ৩,৮০০ টিরও বেশি সামাজিক উদ্যোক্তাদের উপর বিনিয়োগ করে। এই ব্যক্তিরা পালাক্রমে এমন মানুষ হয়ে ওঠেন যাদের অন্যরা উদাহরণ দিয়ে অনুসরণ করার চেষ্টা করেন। সামাজিক উদ্যোক্তা কিশোর-কিশোরীদের সহায়তা করে এবং তাদের উন্নতির, স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠার পথ দেয়, এবং একই সাথে তাদের আশেপাশের লোকেদের কাছ থেকে সহায়তা পেতে থাকে। এই স্বাধীনতার একটি উদাহরণ হলো তরুণ এশিয়ান কিশোর-কিশোরীরা, যাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল কলেজে পড়া এবং শেষ পর্যন্ত স্নাতক হওয়া, তারা যে ব্যবসায়িক দক্ষতা অর্জন করেছে তা ব্যবহার করে এই চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে অনেক দূর এগিয়ে যাবে-এটাই প্রত্যাশা করে অশোকা। বলা যায়, এই পরিবর্তন আনার অভিজ্ঞতাই অশোক সকলকে প্রদান করেন। সামাজিক উদ্যোক্তার বিশ্বায়ন অনেকের উপকার করে। যখন কর্মসংস্থান তৈরি হয়; তখন এই উদ্যোক্তা থেকে কেবল অর্থনীতিই লাভবান হয় না, সমাজও উপকৃত হয়। তবে জড়িত সকলেই যাতে একই সংখ্যক সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ। কেবল সম্পদের বৈষম্যই নেই, ইতিবাচক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য শোষণও কমাতে হবে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কিছু সুবিধা রয়েছে যা তরুণদের তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করে তবে এর সাথে প্রচুর পরিশ্রমও জড়িত। পর্যাপ্ত প্রমাণ ছাড়া ব্যাংক টাকা ঋণ দেয় না যে অর্থটি ভালোভাবে ব্যবহার করা হবে, হয় সম্প্রদায়ে ফেরত পাঠানো হবে অথবা যারা সামাজিক উদ্যোক্তাদের প্রচার করে তাদের দেওয়া হবে। যারা উন্নতির জন্য পরিবর্তন আনতে আগ্রহী তারা অশোকের সাহায্যে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবেন। অশোক জনসাধারণের কাছ থেকে ধারণা পেতে উন্মুক্ত যোগাযোগ এবং পাবলিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। এই ধারণাগুলি মানুষের কঠিন সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে পারে। এই ধারণাগুলিই সামাজিক উদ্যোক্তা ধারণার ভিত্তি তৈরি করে।
আমাদের তিতাস জনপদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান ড. মাতিন আহমেদ একজন অশোকা ফেলো। শিক্ষা বিষয়ে তাঁর বিভিন্ন কর্মকান্ড ইতোমধ্যেই দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে দক্ষ ও মাল্টি ট্যালেন্টেড হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর হাত ধরে এই প্রথম এসআইপি অ্যাবাকাস প্লাস বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করলো (২৮ অক্টোবর ২০২৪)। এসআইপি অ্যাবাকাস’র যাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী ইন্টারন্যাশনাল কালারিং কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করে। (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসআইপি অ্যাবাকাস প্লাস বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এ তথ্য জানান।
তারা জানান, এসআইপি অ্যাবাকাসের বনশ্রী শাখা ২৮ অক্টোবর ও মিরপুর এবং বসুন্ধরা ক্যাম্পাস ২৯ অক্টোবর এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুভ উদ্বোধন হয়।
তিনটি শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী ইন্টারন্যাশনাল কালারিং কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও ভারতের এসআইপি অ্যাবাকাসের প্রতিনিধিদল ও শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়।
এ সময় এসআইপি অ্যাবাকাস ইন্ডিয়া এবং ইন্টারন্যাশনাল পার্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দিনেশ ভিক্টর বলেন, এসআইপি অ্যাবাকাস প্লাস মূলত শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে অধিক মনোযোগী ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করে। শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য এই প্রোগ্রাম খুবই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা সাধারণত আমাদের দুপাশের ব্রেইন একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারি না, এই প্রোগ্রামে এর ব্যবহার শেখানো হয়, যেন একজন মানুষের কর্মদক্ষতা অনেকগুণ বৃদ্বি পায়। তিনি আরও বলেন, সাধারণত এই প্রোগ্রামে ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুর জন্য ভর্তির উপযুক্ত সময়। অ্যাবাকাস+ব্রেইন জিম+স্পিড রাইটিং- এই তিনটির বিষয়ের সমন্বয়ে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে আমাদের প্রশিক্ষিত শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। যাতে করে যেকোনো শিক্ষার্থী বর্তমান থেকে পাঁচগুণ বেশি মেধাবী হতে পারে। তা না হলে আমাদের ব্র্যান্ড প্রমিজ অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকা রিফান্ড দিতে বাধ্য। এসআইপি অ্যাবাকাস প্লাস প্রোগ্রামের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে, এই প্রোগ্রামের বিষয়গুলো শিশুদের এমনভাবে শেখানো হয়, যেন তাদের মস্তিষ্কের ওপর কোনো প্রকার চাপ না পড়ে।
বক্তারা বলেন, বিশ্বে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এরই মধ্যে প্রশিক্ষিত হয়েছে। মালয়েশিয়ান নাগরিক কেলভিন থাম এস আই পি এর প্রতিষ্ঠাতা। প্রতি বছর ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশনের মাধ্যমে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা ৫ মিনিটে ১২৩ টি অংকের সমাধান করে তাদের যোগ্যতার প্রখরতা দেখিয়ে থাকে। উন্নত বিশ্বের অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে অধিক সচেতন বিধায় প্রতিযোগিতামূলক আগামী বিশ্বে সন্তানের টিকে থাকার জন্য এসআইপি এর যুগোপযোগী স্কিলসগুলো তাদের কাছে অধিক গুরত্বপূর্ণ।
এই মাতিন আহমেদের হাত ধরে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ এবং কুমিল্লায় এসআইপির শাখা উদ্বোধন হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় আরো একটি শাখা উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। কথা বলে জানা যায়, এসআইপি ভবিষ্যতে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours