রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস॥
কবি শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হলেও তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চাকুরীর সুবাদে বেশী সময় অতিবাহিত করেছেন। তিনি সরকারের ক্যাডার পর্যায়ে চাকুরী করে বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। বেশির ভাগ সময় ঢাকাতেই থাকেন। তিনি বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তাকেই সত্যিকারের নিভৃতচারী বলা যায়। কারণ তিনি একজন পিএইচডি হোল্ডার-অথচ এই ব্যাপারটা আমরা অনকেইে জানি না। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় ১০/১২টির মতো হবে। লেখালেখি করেন সাহিত্যের বিভিন্ন অলিতে গলিতে। তবে আমি দেখি তিনি কবিতায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাঁর কবিতা গুলো জিউল মাছের মতো। কবিতা গুলো অনেক স্বপ্ন আর আর আলোকময় মশালের মতো। কখনো তাঁর কবিতাকে মনে হয় শানিত এক খাপ খোলা তলোয়ার, আবার কখনো দেখি তাঁর কবিতা নারীর হাসির মতো দ্যোতনায় ভরপুর। কখনো বা তাঁর লেখা গাঁয়ের ঘোমটা দেওয়া অদেখা নারীর মুখের মতোই ইমেজপূর্ণ দারুণ রহস্যময়। যার ইশারায় নির্মিত হয় দ্বিতীয় পৃথিবী।
তিনি একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ আমার কাছে। কারণ তাঁর মধ্যে বিনয় বসবাস করেন বেশ আয়েশী ভঙিতে। আমি বলি জ্ঞানের কাণ্ড হচ্ছে বিনয়। তাই বিনয় না থাকলে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হওয়া যায় না- এটা আমার বিশ্বাস। আমি তাঁর মধ্যে বিনয়ের সর্বোচ্চ শিখর দেখেছি আর নিজের দৈন্যতা দেখে নিজেকেই উপহাস করেছি বারবার।
গত ০৪ নভেম্বর তাঁর জন্মভিটা পশ্চিম মেড্ডায় সাহিত্যপ্রেমিদের একটি চমৎকার মিলনমেলার আয়োজন করেন তিনি। এই মিলন মেলায় বিকেল থেকে রাত অবধি চলে আড্ডা, আলোচনা ও আহার পর্ব। কবিতা, সংস্কৃতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে কথা আর আড্ডায় কাটে সুন্দর সময়। আলোচনায় অংশ নেন, বরেণ্য কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদ, কবি আব্দুল মান্নান সরকার, কবি জয়দুল হোসেন, অধ্যাপক- লেখক মানবর্দ্ধন পাল, কবি মহিবুর রহিম, কবি মানিক রতন শর্মা, শাদমান শাহীদ, কবি আ: রহিম, কবি এম এ হানিফ, লেখক ও গবেষক জহিরুল ইসলাম স্বপন, কবি ও কথাশিল্পী শৌমিক ছাত্তার, কবি হুমায়ুন কবীর, কবি মোসলেম উদ্দিন সাগর, কবি আমির হোসেন, কবি শাহজাদা জামাল, কবি রোকেয়া রহমান, কবি শারমিন সুলতানা, মাশরেকী শিপার প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জামিনুর রহমান, আনিসুর হক রিপন, শাহাদাৎ হোসেন সোহেল,শাহ মাহমুদা বেগম, রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস, মনিরুল ইসলাম শ্রাবন, শরিফুল ইসলাম রাজা, তানজিল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
আলোচনার শেষ পর্বে একটি ভুড়িভোজ ছিলো উল্লেখ করার মতো। অনেকটাই মেজাবানী স্টাইল। সর্বোপরী এই ধরণের আন্তরিকতার শেকড় আরও ছড়িয়ে পড়ুক। সবার সাথে সবার মননশীলতা যুক্ত হোক- চিন্তা ও কর্মের স্বাধীনতা গতি পাক। মানুষের ভেতর বাস করুক শুধুই শিশুমানব এই ছিলো আলোচনার ভাষা। সর্বোপরী সংস্কৃতির রাজধানী জেগে ওঠেছে নতুন করে-নতুন বাংলাদেশে এই আড্ডা তারই ইঙ্গিত বহন করে।
+ There are no comments
Add yours