অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফোর লেনের কাজ শুরুর সম্ভাবনা

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক॥

প্রায় ৩ মাস পর কাজ শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফোর লেন সড়কের। কাজ বন্ধ থাকায় মহাদুর্ভোগের নাম হয়ে উঠেছিল দেশের পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক। ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন ফিরছেন প্রকল্প এলাকায়- এমনই সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশের বেশকটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করন। ঢাকা মেইল এ প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গত ২৭শে অক্টোবর জেলা প্রশাসকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যাতে তাদের নিরাপত্তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, ফোর লেন প্রকল্পের ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও তাদের উপকরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, কাজ এখনও শুরু হয়নি। তারা আস্তে আস্তে আসছেন। ২৬শে অক্টোবর থেকে ১/২জন করে আসছেন। মেশিন অপারেটররা আসছেন। এই মুহূর্তে রাস্তার কাজ করার মতো মালামাল নেই। আমরা তাদের বলেছি, আগে রিপেয়ার কাজ এবং ধুলা নিবারণে পানি দেওয়া। এজন্য তারা পানির ট্যাঙ্কার ভাড়া করছে। এরপর ঘাটুরার ব্রিজ কমপ্লিট করা। আমরা টার্গেট দিয়েছি এই সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করার। মেশিনপত্রগুলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
সরকার পতনের পর এই সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত ১০ই আগস্ট ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলে যান তাদের দেশে। কাজ বন্ধ হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় দুর্ভোগ। বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়। এই সময়ে জেলা প্রশাসক বার বার সরকারের ওপর মহলে একাধিক চিঠিতে দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। সড়কে জনদুর্ভোগ লাঘবে এর মেরামত কাজের অনুমোদনও দেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপরই গত ২৭শে সেপ্টেম্বর সড়কটি পরিদর্শন করতে আসেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক। ভারতীয় ঠিকাদার আসছিল না, আবার সরকারি অর্থে মেরামত কাজও হচ্ছিল না। ফলে দুর্ভোগ দিন দিন বাড়তেই থাকে।
আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ভারতীয় ঋণ সহায়তা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ৩০শে জুন। শুরু থেকে নানা কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়। তিনটি প্যাকেজে চলা এই কাজের মধ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইল মোড় পর্যন্ত ১ নম্বর প্যাকেজের কাজ হয়েছে ৬২ পার্সেন্ট। দ্বিতীয় প্যাকেজ সরাইল মোড় থেকে আখাউড়া তন্তর পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫২ ভাগ। আর তৃতীয় প্যাকেজে থাকা তন্তর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত কাজ শুরুই হয়নি। গড়ে সড়কের কাজ ৫০ ভাগ হয়েছে। নির্মাণকাজ অসম্পন্ন থাকায় আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে তন্তর পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ খুউব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে আশুগঞ্জ ও সরাইল গোলচত্বর, ঘাটুরা মেডিকেল কলেজ, বিরাশার, মধ্যপাড়া, পৈরতলা, পুনিয়াউট, রাধিকা, উজানিসার এলাকায় দুর্ভোগের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে সাময়িক মেরামতের চিন্তা-ভাবনাও করা হয়। এজন্যে ১৫ কোটি টাকার স্টিমিটসহ প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠিপত্র পাঠানো হয়। পরে তা না করে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের আশার অপেক্ষা চলতে থাকে।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours