অনলাইন ডেস্ক॥
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই বিপাকে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ও তার ব্যতিক্রম নয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক প্রভাবশালী পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলও পালিয়েছেন। তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পালিয়েছেন। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি ছবি ভাইরাল। তবে কখন কিভাবে কোন সীমান্ত পথে তিনি পালালেন তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলনের জেরে গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর মেয়রের পালিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় প্রথমে মেয়রসহ তার নেতাকর্মীরা আত্মরক্ষার্থে দিকবিদিক ছোটাছুটি করছে এক পর্যায়ে মেয়রসহ অনেকেই তার বাসভবনের পাশের একটি দীঘিতে ঝাঁপ দেন। এরপর থেকেই নিরুদ্দেশ হয়েছেন আখাউড়ার পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল। কাজল আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের খুবই আস্থাভাজন ছিলেন। গত ৫ আগস্ট দুপুরে সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের রাধানগরের সাততলা বাড়িতে হামলা করে। বিক্ষুব্ধরা তার বাড়ি ভাঙচুর, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করে। তার বাড়ি থেকে দেশি-বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। হামলার সময় বাড়ি থেকে কৌশলে পালিয়ে যান মেয়র। সদ্য সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত তাকজিল খলিফা কাজল পর পর তিনবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় তিনি এলাকায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন।
দলীয় রাজনীতিতে বিভাজন, প্রতিপক্ষের রাজনীতিবিদদের শক্ত হাতে দমন, মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষের রাজনীতিবিদদেরকে হয়রানি করা, উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ, দলীয় প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বদলি বাণিজ্য, চাকরির তদবির ও স্থলবন্দরের ব্যবসায় প্রভাব খাটিয়ে তাকজিল খলিফা কাজল অর্জন করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, গত ১৫ বছর তাকজিল খলিফা কাজলের কারণে তারা কোন দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। মেয়র বিভিন্নভাবে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিতো। গত ৫ আগস্ট মেয়রের রাধানগরের সাততলা বাড়িতে হামলা করে বিক্ষুব্ধরা। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের উপর মেয়র যে অত্যাচার চালিয়েছেন এরই প্রতিফলন এটা। তবে হামলার পর যে লুটতরাজ হয়েছে সেটি আরেকটি পক্ষের কাজ। তাকজিল খলিফা কাজল ২০১২ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় মেয়র হয়ে তিনি এলাকায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেন। আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল আলম জানান, যাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আমরা তাদের ইমিগ্রেশন করছি না। আমাদের কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরত দিচ্ছে। আখাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল আমাদের এই ইমিগ্রেশন দিয়ে যায়নি।
+ There are no comments
Add yours