ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্ত্রীর যাবজ্জীবন, পরকীয়া প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

Spread the love


অনলাইন ডেস্ক॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রীকে যাবজ্জীবন ও তার পরকীয়া প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এই দণ্ডাদেশ দেন। আসামিরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বারাইলচর গ্রামের তুজু মিয়া মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৭) ও নিহত ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম (৩৩)। রায় প্রদানের সময় রিনা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রফিকুল পলাতক। আদালত সূত্রে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুরের বিষ্ণরামপুর বাজারে পেঁয়াজ-রসুনের ব্যবসায়ী ছিলেন বাচ্চু মিয়া। রিনা বেগমকে বিয়ে করার পর তাদের ১৫ বছরের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান হয়। এরই মাঝে রিনার সঙ্গে তার খালাতো বোনের স্বামী রফিকুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে বাচ্চু তার স্ত্রীকে শাসান। তারপরও রিনা ও রফিক গোপনে মিলিত হতেন। পাশাপাশি রফিকুল বিয়ে করতে রিনা বেগমকে চাপ প্রয়োগ করেন।
এসময় রিনা জানান, স্বামী বাচ্চুকে মেরে ফেলতে পারলে তাহলেই রফিককে বিয়ে করতে পারবেন। এর প্রেক্ষিতে দুজন বাচ্চু মিয়াকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বিকেলে বাচ্চুর সাথে রফিকুল বাজারে চা পান করেন। এরপর সন্ধ্যায় তাকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ানোর কথা বলে নির্জন স্থানে নিয়ে লোহা কাটার হ্যাস্কো ব্লেড দিয়ে বাচ্চু মিয়ার গলা কেটে ফেলে দিয়ে আসেন রফিকুল।
এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে নিহতের ছোট ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর রফিকুল ও রিনার পরকীয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এ অবস্থায় তাদের দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেন।
একই বছরের ২২ ডিসেম্বর বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ দুজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে রিনা বেগম ও রফিকুল ইসলামকে হত্যায় অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ২৩ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
পরে যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম শেষে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আদালত রায়ে নিহত বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। তার প্রেমিক রফিকুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours