অনলাইন ডেস্ক:
কোরিয়ানদের বিখ্যাত বাম্বু সল্ট বা বাঁশের লবণ কিনতে গেলে এককেজির জন্য আপনাকে গুণতে হবে ৪০ হাজার টাকা। মূলত এই লবণ উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং কষ্টসাধ্য। এজন্যই এই লবণের এত দাম। উপকূলীয় সমুদ্র থেকে প্রথমে সাদা লবণ সংগ্রহ করা হয়। তারপর বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ কথা হলো-ওই বাঁশের বয়স যাতে তিন বছর হয়। এ ধরনের বাঁশগুলোই লবণ উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত। তারপর কারখানায় আনার পর ছোট ছোট আকৃতিতে কেটে নেওয়া হয় ওই বাঁশকে। এখানে একটি বিশেষ কারিশমা আছে। বাঁশগুলোকে এমনভাবে কাটা হয় যেন, একপ্রান্ত খোলা এবং আরেকপ্রান্ত বন্ধ থাকে। এরপর আহরিত লবন ওই বাঁশে ঢুকানো হয়। এর পরের ধাপে লবণ ভরা বাঁশের টুকরোগুলো বিশাল বড় একটি চুলার ভেতরে দেওয়া হয়। চুলায় যে আগুন দেওয়া হয়, এই আগুনের তাপমাত্রা থাকে প্রায় এক হাজার ডিগ্রী সেলসিয়াস। গড়ে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ধরে সেগুলিকে পোড়ানো হয়। এরপর বাঁশের টুকরোগুলিকে বের করা হয়। দীর্ঘ সময় আগুনে পোড়ার কারণে বাঁশের টুকরোগুলি ছাই হয়ে যায়। এভাবে প্রায় মোট ৮ বার পোড়ানো হয়। এতবার পোড়ানোর কারণে বাঁশে থাকা খনিজ উপাদান, ঢাকনা হিসেবে মাটিতে থাকা পুষ্টি এবং পাইন গাছে থাকা পুষ্টিকর পদার্থ লবণে সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়। এবার বিশেষভাবে পোড়ানোর ফলে শেষধাপে এসে লবণগুলো এবার আগুনের তাপ পেয়ে গলে চুইয়ে চুইয়ে লোহার কন্টেইনারে জমা হতে থাকে। এরপর এই গলিত লবণটি ঠাণ্ডা করার জন্য কয়েক দিন পর্যন্ত রেখে দেওয়া হয়। ঠাণ্ডা হওয়ার পর দেখা যায় লবণটি পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে। তখন এটিকে দেখতে অনেকটা চকমকে ক্রিস্টাল পাথরের মতো মনে হয়। এরপর শ্রমিকেরা বড় আকারের এই লবণের টুকরোকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুড়ো করতে থাকে। এভাবে তৈরি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামি লবণ।
+ There are no comments
Add yours