ক্যান্টিন-ডাইনিংয়ে পৌনে ২ লাখ টাকা বাকি ছাত্রলীগের

Spread the love


অনলাইন ডেস্ক

রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের পদধারী নেতারা ক্যান্টিন ও ডাইনিংয়ে বাকি ও ফাউ খাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লিজ নিয়ে ক্যান্টিন ও ডাইনিং চালানো ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে বছরের পর বছর ধরে কলেজ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাননি ভুক্তভোগীরা। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি ও অনিয়মের ফিরিস্তি বেরিয়ে আসছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসছে দলটির ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অপকর্ম। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী কলেজেও একক আধিপত্য দখলে রেখেছিল দলটি। ইতোমধ্যেই তাদের প্রধান নেতাকর্মীদের দখলে থাকা রুম থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণে দেশীয় অস্ত্র, মদ, গাজাসহ বিকৃত যৌনাচারের নানা উপকরণ। এর বাহিরেও দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের নামে ক্যাম্পাস ও হল সংলগ্ন এলাকার ক্যান্টিন-ডাইনিংয়ে বাকি খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাওনাদারদের দাবি, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতারা ডাইনিং ও ক্যান্টিনে এক লাখ ৭০ হাজার টাকারও বেশি বাকি রেখেছেন, যা পরিশোধ না করায় ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় নেতাদের পরিচয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে বাকি খেতেন তারা। বকেয়া টাকা চাইলে হামলা-ভাঙচুরসহ ক্যান্টিন বন্ধেরও হুমকি দিতেন তারা। ফলে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কলেজ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও মিলেনি কোনো সমাধান। যদিও কলেজ প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন না। বর্তমানে সরকারের পতনের পর ছাত্রলীগের ওই নেতারা গা ঢাকা দিয়েছেন। ক্যান্টিন ও ডাইনিং পরিচালনাকারীরা জানিয়েছেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের নামে বিপুল পরিমাণ বকেয়া জমেছে। বিশেষ করে, বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্তর নামে ৩ হাজার ৪৩০ টাকা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাফরের নামে ১৭ হাজার ৯৯৫ টাকা এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাঈমের নামে ১১ হাজার ১৭৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য নেতাদের নামেও বেশ কিছু টাকা বাকি রয়েছে। মুসলিম ছাত্রাবাসের ডাইনিংয়ে বকেয়ার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ১ লাখ ২০ হাজার টাকারও অধিক। এখানে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পিয়াসের নামে ৬০ হাজার টাকা এবং মেহেদি হাসান ও রাফির নামে যথাক্রমে ১৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। ইমন, সিয়াম, সিজারসহ আরও অনেক নেতার নামে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বাকি রয়েছে। এদিকে, সাবেক হোস্টেল সুপার আনিসুজ্জামান মানিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়ী ও হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। তিনি নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘণিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিতেন। ফলে দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাদের প্রশ্রয় দিতেন। অভিযোগ আছে, তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি উদাসীন ছিলেন। বিশেষ করে, হোস্টেলে মাদক সেবন ও নারীর আসর বসানোর পেছনেও তার মদদ আছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝেও চরম শৃঙ্খলাহীনতা সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, আনিসুজ্জামান মানিকের সময়ে হোস্টেলের পরিবেশ ক্রমশ অবনতির দিকে যায়। তিনি সরকার দলের ছাত্রনেতাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। যা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শিক্ষাগত বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তার দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে হোস্টেলে নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতির ঘটনা বৃদ্ধি পায়, যা বারবার বলেও কোনো সমাধান মিলেনি। এ বিষয়ে সাবেক হোস্টেল সুপার আনিসুজ্জামান মানিক বলেন, হোস্টেলের ডাইনিংয়ের সাথে কলেজ প্রশাসনের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা তাদের মতো ব্যবসা করেছে। ছাত্রলীগের বাকি সম্পর্কে কোনো কিছুই জানা নাই। (আমাদের সময় )

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours