ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনাসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী এড. আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আরো ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিকের সামনে ২০২১ সালের ২৭ মার্চ গুলিতে নিহত জহিরুল ইসলামের বড় ভাই বাবুল মিয়া বাদী হয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিনকে হুকুমের আসামি করা হয়।
এছাড়াও এই মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সদ্য সাবেক সাংসদ মইন উদ্দিন মইন, সদ্য সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিল্লাল মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. আবু সাঈদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পিপি এড.মাহবুবুল আলম খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. শফিউল আলম লিটন, জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক এহতেশামুল বারি তানজিল, তানজিল আহমেদ, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী শফিউল্লাহ মিয়া, সাবেক আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, সাবেক বিজয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলী, জেলা যুবলীগ সভাপতি এড. শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এড. সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, সাবেক ভিপি জায়েদুল হক, হাসান সারোয়ার, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা রাফি, আল আমিন সওদাগর, আমজাদ হোসেন রনি, আলী আজম, জসীম উদ্দিন রানা, আওয়ামীলীগ নেতা সুজন দত্ত, এড.গোলাম মহিউদ্দিন স্বপন, এড. সমর ভৌমিক, রাকিব আহমেদ সোহেল, মিজান আনসারী, এড.আবদুল জব্বার মামুন, শাকিল, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, সদ্য সাবেক সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শের আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সদ্য সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভন, ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল, সাইফুদ্দিন, লিমন আল স্বাধীন, মজলিশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফজলু মেম্বার, তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান, ইসতিয়াক আহমেদ দুলাল, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, তানভীর হায়দার, আশরাফ, বিল্লাল আহমেদ, মাসুদুর রহমান, রহিম উদ্দিন আজিজুল হক। মামলায় আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী বাবুল মিয়া এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে হেফাজতে ইসলাম আগমনের বিরোধিতা করে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। আমার ভাই জহিরুল ইসলাম এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এই আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী ও অন্যান্য আসামিদের নিয়ে বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের প্রতিহতের উদ্দেশ্যে সকল আসামিগণ জেলার আন্দোলনকারীদের ওপর বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
আন্দোলনকারীগণ ও তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীরা ২৭ মার্চ একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ঘটনাস্থলে আসা মাত্রই নামে আসামিরা হত্যা করার উদ্দেশ্যে নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোঁড়া অসংখ্য গুলি ও ককটেলের আঘাতে আমার ভাই জহিরুল ইসলামের শরীরে বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার ভাই মৃত্যুবরণ করেন। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত না করেই মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। পরে আমিও আমার লোকজন আমার ভাই জহিরুল ইসলামের মরদেহ এলাকায় নিয়ে দাফন সম্পন্ন করে ফেলি। পরবর্তীতে থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে আমাকে মামলা করা যাবে না, মামলা করলে আমাকে প্রাণে শেষ করে দিবে বলে হুমকি দেয়। তৎকালীন সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours