প্রতিবেদক:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকা চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আজ মঙ্গলবার ৩টি মামলা হয়েছে।
যার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে জনৈক মিরাজ হোসেন গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি, মোহাম্মদপুরের বছিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া গুলিতে নিহতের ঘটনায় একটি এবং রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় গুলিতে ঠিকানা পরিবহনের হেলপার দুলাল ওরফে সেলিম গুলিমে নিহত হওয়ার ঘটনায় এ মামলাগুলো হয়েছে।
মামলাগুলোর প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। তিনটি মামলায় মোট এহাজারনামীয় আসামি রয়েছেন ১৬৩ জন।
তবে, মিরাজ হোসেন হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামি ৯২ জন। নিহতের স্বজন খোরশেদ আলম মিয়া এ মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেন বাদীর জবানবন্দি নিয়ে ডেমরা থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলায় উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাবিবুর রহমান, হারুন-অর-রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট মিরাজ ডেমরার সানারপাড় মেইন রোডে আসলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও র্যাবের সাথে আওয়ামী লীগ, পেশাজীবীরা ও অন্যান্য নেতাকর্মী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের কয়েকশ জন আগ্নেয়াস্ত্র , রামদা, চাপাতি, লোহার রড, হেলমেট বাহিনীর সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ও আক্রমণ করে। তারা গুলি চালাতে থাকে। এতে মিরাজসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে মনসুর মিয়া নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২২ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন নিহতের ভাই আয়নাল হক।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সালমান এফ রহমান, সাদেক খান, পুলি কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাবিবুর রহমান, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, হারুন অর রশীদ ও ড. খ মহিদ উদ্দিন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মনসুর মিয়া মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকায় তার সন্তানকে মাদ্রাসা থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে দুলাল ওরফে সেলিম নিহতের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি ৪৯ জন। নিহত দুলালের ভাই মোস্তফা কামাল মামলা করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন বাদীর জবানবন্দি নিয়ে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখেছেন।
এ মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, রমেশ চন্দ্র সেন, নারায়নগঞ্জর সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, সাবেক সাংসদ মশিউর রহমান মোল্লা সজল, সাদ্দাম হোসেন, শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও সজল কুন্ড।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে গত ৩ আগস্ট কাজলা এলাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। মাথায় গুলি লেগে মারা যান দুলাল।
+ There are no comments
Add yours