রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস ॥ এই মুহূর্তে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মুখে মুখে একটিই নাম- আব্দুল মালেক। হাটে মাঠে চায়ের আড্ডায়, অবসরে মানুষের মুখে ও আলোচনায় নিঃস্বার্থ সমাজসেবক আব্দুল মালেক এর নামটি ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ওঠে আসছে। আর এই আলোচনা সরাইল থেকে ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বত্রই চলছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে দেশে এবং বিদেশে যারা তাঁকে চেনেন- তারা এবং যারা চেনেন না তারাও তাঁকে নিয়ে আলোচনা করছেন। তারা দেখছেন, কীভাবে একজন আব্দুল মালেক নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে মানুষের জন্য কিছু কাজ করছেন।
প্রশ্ন আসতে পারে কী করেছেন এই মহৎপ্রাণ আব্দুল মালেক? আসুন জেনে নিই বিস্তারিত।
তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে ও নিজস্ব অর্থায়নে ইতোমধ্যেই সরাইলের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার-গুচ্ছগ্রাম এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করেছেন। এই সড়কটি নির্মাণ করতে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ কাজ করেছেন। তিনি সবাইকে দৈনিক সম্মানী দিয়েছেন। একবেলা নিজের হোটেল থেকে খাবার নিয়ে খাবার ব্যবস্থা করেছেন।
এরপর কাটানিশার-ধল্লা প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করেছেন। লাহোর নদীর দুইপারে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছেন। লাহোর নদীর উপর অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। এই দুই কিলোমিটার সড়ক র্মিাণে তিনি একটি ভেকু ভাড়া নিয়েছেন। এই সড়কটিও নির্মাণ করতে প্রায় দুইমান সময় লেগেছে। সবচেয়ে বড় কথা আব্দুল মালেককে এলাকার সাধারণ মানুষ যেমন উৎসাহ দিয়েছেন- তেমনি নিজেরাও সেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন। আর আব্দুল মালেক নিজ হাতে কোদাল নিয়ে মাটি কেটেছেন। মাথায় ঝুড়ি তুলে দিয়েছেন।
তেরোকান্দায় একটি ব্রিজের সংযোগ সড়ক পাকাকরণ কাজ শেষ করেছেন। বাড়িউড়া- কালীকচ্ছ সড়কের মেরামত কাজ চতুর্থবারের মতো করে যাচ্ছেন। আর অতি সম্প্রতি বৃষ্টিতে অকেজো হয়ে পড়া কাটানিশার থেকে কানিউচ্ছ, গুচ্ছগ্রাম, কুচনি ও বুড্ডাগামী সড়কের মেরামত কাজ করে দিচ্ছেন নিঃস্বার্থ সমাজসেবক মানবতার ফেরিওয়ালা আব্দুল মালেক।
ব্যক্তি উদ্যোগে এবং নিজস্ব অর্থায়নে জনগুরুত্বপূর্ণ ওইসব জনহিতকর কর্ম সম্পাদনের মধ্য দিয়ে এই সময়ের ভাইরাল একটি নাম-নিভৃতচারী সমাজসেবক আব্দুল মালেক। ইতোমধ্যেই স্থানীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিভৃতচারী সমাজসেবক আব্দুল মালেক এর বিশাল কর্মযজ্ঞ ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছেন সমাজসেবক আব্দুল মালেক।
এইসব কর্মযজ্ঞ সরেজমিনে দেখার জন্য ইতোমধ্যেই সরাইলের সাবেক এমপি এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাসহ একাধিক জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষ সরাসরি দেখতে ভিড় করছেন প্রতিদিন। তারা বলছেন, একজন সত্যিকারের কর্মবীর আব্দুল মালেক। এটা এখন প্রমাণিত সত্য। ইতোমধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জনস্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে ও নিজস্ব অর্থায়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করছেন নিভৃতচারী সমাজসেবক আব্দুল মালেক। তিনি যে কাটানিশার-গুচ্ছগ্রাম সড়ক নির্মাণ করেছেন, সড়কটি প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি আগে একটি গোপাট আকারে ছিলো। সড়কটি নির্মিত হওয়ায় আশে পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হচ্ছে। শিক্ষা চিকিৎসা আর কৃষিতে ভালো অবদান রাখছে এই সড়ক গুলো।
এদিকে লাহোর নদীর দুইপারের হাজার হাজার মানুষ নদী পারাপারে বেশ ভোগান্তির মধ্যে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী সমাজসেবক আব্দুল মালেককে জানালে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে নদীর দুইপারে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেন। শুধু তাই নয়-সংযোগ সড়ক নির্মাণ শেষ হলে নদীর উপর অস্থায়ী একটি ব্রিজ নির্মাণ করেন নিভৃতচারী সমাজসেবক আব্দুল মালেক। এরফলে গেলো ঈদুল আযহার নামাজ পড়তে নোয়াগাঁও-ইসলামাবাদ ঈদগাহ মাঠে যেতে সক্ষম হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ শেষে তিনি কাটানিশার-ধল্লা সড়ক নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। এই সড়কটির নির্মাণ কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ের রয়েছে। এখন চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ।
এদিকে তেরোকান্দায় একটি ব্রিজের সংযোগ সড়ক গর্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছিল। এই প্রেক্ষিতে তিনি তার নিজস্ব অর্থায়নে ব্রিজটির সংযোগ সড়ক বেঁধে দেন এবং পাকাকরণ করে তাকে স্থায়ী রূপ দেন। অপরদিকে, সরাইলের অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বাড়িউড়া- কালীকচ্ছ সড়কের মেরামত কাজ করে এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন নিভৃতচারী সমাজসেবক আব্দুল মালেক। এই সড়কটির মেরামত কাজ অব্যাহত আছে। এদিকে, কাটানিশার থেকে কানিউচ্ছ, গুচ্ছগ্রাম, কুচনি ও বুড্ডাগামী সড়কের মেরামত কাজ এখন চলমান। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কটি দিয়ে মানুষ চলাচলের বেশ কষ্ট হচ্ছিল বিষয়টি আব্দুল মালেক নিজে গিয়ে দেকে তারপরেই নিজস্ব অর্থায়নে মেরামতের কাজে লেগে যান।
আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, আমি মানুষকে ভালোবাসি। আমার জন্মভূমিকে ভালোবেসে এরাকার উন্নয়নে কাজ করছি। এই কাজ করতে আমার প্রচুর টাকা শ্রম ও সময় ব্যয় হচ্ছে। আর তার জন্য আমি কোনো বিনিময় চাই না। আমি চাই আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা। কারণ আমি জানি টাকা থাকলেই মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায় না। কারণ টাকা উপার্জন করা সহজ। কিন্তু তা ব্যয় করা অনেক কঠিন।
তিনি বলেন, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেনো আমৃত্যু আপনাদের জন্য সেবা করে যেতে পারি।
প্রসঙ্গত: আব্দুল মালেক কাটানিসার গ্রামের কৃতি সন্তান। ব্যবসার সুবাদে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের হালদারপাড়াস্থ তার নিজস্ব বাসভবনে স্বপরিবারে বসবাস করছেন। তিনি গত প্রায় এক বছর ধরে এলাকার উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মসজিদ রোডে অবস্থিত দি ঝুমুর হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, গ্র্যান্ড এ মালেক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, গ্র্যান্ড এ মালেক আবাসিক হোটেল, এ মালেক কনভেনশন হল এন্ড কমিউনিটি সেন্টার। এছাড়াও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজবেক আব্দুল মালেক দৈনিক ফ্রনটিয়ার পত্রিকার সম্পাদক। জনপ্রিয় আইপি চ্যানেল এএমটিভি বাংলা ও এ মালেক গ্রুপের চেয়ারম্যান। তাছাড়াও তিনি ব্যবসায়ী সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির একজন সম্মানিত পরিচালক। তিনি দেশীবিদেশী বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে মানবসেবা করে আসছেন।
+ There are no comments
Add yours