মোস্তাফিজার রহমান জাহাঙ্গীর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি॥
নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ তুলে স্কুলে তালা দিয়েছে এলাকাবাসী। স্কুল সভাপতি (ইউপি চেয়ারম্যান) আব্দুল মালেক ও প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে উঠেছে এই বানিজ্যের অভিযোগ। গত ২১ দিন ধরে বিদ্যালয়ে ঝুলছে তালা, স্কুলে আসছে না প্রধান শিক্ষক কিংবা অন্যকোনো শিক্ষক কর্মচারী। ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক এবং এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নেয়নি কোন ব্যবস্থা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের চৈতার খামার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্ত হয় ২০২৪ সালে। নিয়মিত অফিস সহায়ক মনিরুজ্জামানের অভিযোগ, তাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হলেও স্কুল এমপিও ভুক্তির সময় তার নাম অফিস সহায়ক বাদ দিয়ে নৈশ প্রহরী হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্কুল সভাপতি আব্দুল মালেক ও প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে নিয়োগ দিতেই এই অপচেষ্টা। বিষয়টি নিয়ে বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেও মেলেনি সুরাহা। তাই গত ১৮ মে মনিরুজ্জামানের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে স্কুলের লাইব্রেরিসহ সমস্ত কক্ষে তালা দেয় এলাকাবাসী ।
রোববার (৯জুন) চৈতার খামার তালাবদ্ধ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। পরে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিকার চেয়ে মাববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দাতার ছেলে মনিরুজ্জামানকে পিয়ন এবং তার স্ত্রীকে কেরানী পদ দিয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় এমপিও হওয়ার পর পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষক মিলে তাদের ওই পদ থেকে বাদ দিয়ে গোপনে অন্যজনকে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছে।
ভুক্তভুগী মনিরুজ্জামান মনির বলেন,’আমি দীর্ঘদিন ধরে এ স্কুলে পিয়ন পদে কাজ করছি। আমার বাবা এখানে স্কুলের জন্য পুরো জমি দান করেছে। এখন আমাকে নৈশ্য প্রহরী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আমি এটির সঠিক বিচার চাই।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবানা আক্তার সাথী বলেন, আমি ২১ দিন ধরে স্কুলে আসি, স্কুলে দেখি স্কুলে তালা দেওয়া, তাই আমি ফিরে যাই। আমি চাই তাড়তাড়ি শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক। সামনে আমাদের পরীক্ষা, আমি আমাদের শিক্ষকরা স্কুলে আসুক, আমরা যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারি।
অভিভাবক জামাল বলেন, আজ ২১ দিন ধরে স্কুলটি বন্ধ আছে। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই স্কুল তাড়াতাড়ি খুলুক। আমাদের বাচ্চারা সঠিকভাবে পড়াশোনা যাতে করতে পারে। আর নিয়োগ নিয়ে যে ঝামেলাটা রয়েছে সেটিরও যেন তাড়াতাড়ি সমাধান হয়।
স্কুল সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন,একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর এভাবে স্কুল তালা দেওয়ার ইখতিয়ার রাখেনা। যারা মূলত স্কুলের বিরোধী তাঁরাই কাজগুলি করতেছেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুল আলম বলেন, ২১ দিন ধরে বন্ধ স্কুলটি সেটা আমি জানিনা, আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি ইতিমধ্যে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারকে নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি আগামীকাল বিদ্যায়লটিতে যাবেন। বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আসবেন। কমিটির সাথে কথা বলবেন কেন এই অবস্থা হয়েছে এবং যথা তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours