মানুষ শব্দটি ডিকশনারি থেকে সত্যি সত্যিই ওঠে যাবে না তো?

Spread the love

বর্বরোচিত ও নৃশংস হচ্ছে মানুষের মগজ

রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস॥
শরীর টুকরো টুকরো করে হাড় থেকে মাংস আলাদা করে হলুদ মিশিয়ে ভরা হয় ব্যাগে। এভাবেই বিফ্র করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ঢাকায় বসে ২/৩ মাস আগে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ঢাকায় না পেরে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কৌশলে নেওয়া হয় কলকাতায়। সেখানে তাকে হত্যার পর শরীর টুকরো টুকরো করে হাড় থেকে মাংস আলাদা করা হয়। এরপর হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ভরে ওই বাসা থেকে বের করা হয়েছে। তবে কোথায় মরদেহের খণ্ডিত অংশ ফেলা হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিবিপ্রধান বলেন, দুই থেকে তিন মাস আগেই এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তারা পরিকল্পনা করেছিলেন ঢাকায় হত্যা করবেন। তিনি জানান, মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামানের দুই বাসার মধ্যে একটি গুলশানে, অন্যটি বসুন্ধরায়। এ দুই বাসায়ই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। আনার হত্যার নেপথ্যে রাজনীতি বা অন্য যে কারণই থাকুক না কেন বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হত্যাকারীরা পারেননি। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা কলকাতায় গত ২৫ এপ্রিল একটি বাসা ভাড়া নেন। তারা ৩০ এপ্রিল ওই বাসায় ওঠেন। যিনি হত্যার পরিকল্পনা করেছেন তিনি ও আরেকজনসহ মোট তিনজন বিমানযোগে কলকাতার ভাড়া বাসায় ওঠেন। তিনি জানান, তারা দুই মাস ধরে খেয়াল রাখছেন কখন আনারকে কলকাতা আনা যাবে। ১২ মে আনারের বন্ধু গোপালের বাসায় যান। সেখানে আরও দুজনকে হায়ার করা হয়। তারা ওই বাসায় আসা-যাওয়া করবেন। তারা হলেন- জিহাদ বা জাহিদ ও সিয়াম। মাস্টারমাইন্ড গাড়ি ঠিক করেন। কাকে কত টাকা দিতে হবে, কারা কারা হত্যায় থাকবেন, কার দায়িত্ব কী হবে তা ঠিক করেন। গত ১২ মে আনার তার ভারতীয় বন্ধু গোপালের বাসায় যায়। ১৩ তারিখ ওই ভাড়া বাসায় ওঠেন। ফয়সাল নামে একজন তাকে রিসিভ করেন। সেখান থেকে নিয়ে যিনি মূল হত্যাকারী তিনি আনার ও ফয়সালকে নিয়ে চালক রাজার গাড়িতে করে ওই বাসায় যায়। আগে থেকে অবস্থান করা মোস্তাফিজও বাসায় ঢোকেন। সেখানে ভেতরে ছিল জাহিদ, সিয়াম। আধা ঘণ্টার মধ্যে নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
এবিষয়ে দেশেবিদেশের মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি যে এতোটা নৃশংস ও বর্বোরোচিত হবে এটা কল্পনাতীত। আমাদের মন মগজ এতোটা বিকৃত কেনো হচ্ছে? কোনো আমরা পশুর চেয়ে নিকৃষ্টভাবে চিন্তা ও তার বাস্তবায়ন করছি? সমাজদেহের এই পচনের জন্য দায়ী কে? আমরা আনন্দ ও বিনোদনহারা হতে হতে শুধু অদৃশ্য ক্ষমতা আর লোভের মোহে নিজেদেরকে পশুর স্তরে নামিয়ে আনছি! আমাদের আজকের এই মুহূর্তটুকু কালের গর্ভে কী নামে অবহিত হবে? আমাদের পরিচয় কী হবে? মানুষ শব্দটি ডিকশনারি থেকে সত্যি সত্যিই ওঠে যাবে না তো?

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours