অনলাইন ডেস্ক॥
সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার পর বদলে যায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপট। ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলায় ইরানও কেঁপে উঠেছিলো। ইসরায়েল নাকি ইরানেও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পক্ষেই কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি। আপাতত সংঘাত প্রশমনের দিকে থাকলেও দুই দেশের দ্বন্দ্বের মূল চালিকা শক্তি হবে বিমান বাহিনী। এবার দেখে নেয়া যাক বিমান শক্তিতে কোন দেশ এগিয়ে ইরান নাকি ইসরায়েল?
ইরানি বিমানবাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ৩৭ হাজার। কিন্তু কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটি উচ্চপ্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম খুব বেশি সংগ্রহ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস)।
ইরানের কাছে কেবল কয়েক ডজন সক্রিয় আক্রমণকারী বিমান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে যেমন আছে রুশ যুদ্ধবিমান, ইরানি বিপ্লবের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করা কিছু পুরোনো মার্কিন বিমান।
তথ্য মতে, তেহরানের সংগ্রহে রয়েছে ৯টি এফ-ফোর ও এফ-ফাইভ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন, রাশিয়ার সুখোই-টুয়েনটি ফোর-এর একটি স্কোয়াড্রন ও কয়েকটি মিগ-টুয়েনটি নাইন, এফ-সেভেন ও এফ-ফোরটিন যুদ্ধবিমান। পাইলট ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে বিস্ফোরিত হবে, এমন বিমানও আছে ইরানের কাছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইরান কয়েক হাজার ড্রোনের মালিক। পাশাপাশি ইরানের ভাণ্ডারে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণযোগ্য মিসাইল রয়েছে।
এগুলোর কোনো কোনোটি আধাটনের মতো ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
আত্মরক্ষার জন্য ইরান রাশিয়া ও দেশে নির্মিত আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।
২০১৬ সালে রাশিয়া থেকে এস-থ্রি জিরো জিরো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহ করে ইরান। এ ব্যবস্থায় রয়েছে দূরপাল্লার ভূমি-আকাশ মিসাইল যেগুলো বিমান ও ব্যালিস্টিক মিসাইলসহ একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে একইসঙ্গে পালটা আক্রমণ চালাতে সক্ষম।
এছাড়া ইরান নিজেরা বাবর-থ্রি সেভেন থ্রি ভূমি থেকে আকাশে ব্যবহারযোগ্য মিসাইল তৈরি করেছে। পাশাপাশি আরও উদ্ভাবন করেছে সায়াদ ও রাদ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী বেশ অগ্রসর হয়েছে। এটির কাছে কয়েকশ এফ-ফিফটিন, এফ-সিক্সটিন ও এফ-থারটিফাইভ মাল্টিপারপাস যুদ্ধবিমান রয়েছে। গত সপ্তাহে ইরানের নিক্ষিপ্ত ড্রোন ভূপাতিত করতে এসব বিমান ভালো ভূমিকা রেখেছিল।
ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর দীর্ঘপাল্লার বোমারু বিমান নেই। তবে কিছু বোয়িং সেভেন জিরো সেভেন বিমানকে পরিবর্তন করে রিফিউয়েলিং ট্যাংকারে পরিণত করেছে এটি। ফলে এর জঙ্গিবিমানগুলো দূরের লক্ষ্যবস্তুতে গিয়েও হামলা চালিয়ে ফিরে আসতে পারবে।
ইসরায়েলে পাইলটবিহীন হেরন ড্রোন একটানা ৩০ ঘণ্টারও বেশি উড়তে সক্ষম। এছাড়া ডেলিয়াহ মিসাইলের পাল্লা মাত্র ২৫০ কিলোমিটার হলেও চাইলে বিমানবাহিনী এটিকে ইরানের সীমান্তের কাছাকাছি এসে নিক্ষেপ করতে পারে।
ধারণা করা হয়, ইসরায়েল দূরপাল্লার ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণযোগ্য মিসাইল তৈরি করেছে। তবে দেশটি কখনো তা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি।
+ There are no comments
Add yours