শীর্ষে ঢাকা চট্টগ্রাম সিলেট কুমিল্লা ও নোয়াখালী

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক॥

প্রবাসীরা বিদেশ থেকে প্রতি মাসে যে পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান, তার বড় অংশই আসে ঢাকা জেলায় অবস্থিত ব্যাংক শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারগুলোর বেশির ভাগই ঢাকায় অবস্থান করে অথবা ঢাকার ব্যাংক শাখাগুলোতেই রয়েছে তাঁদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট বা হিসাব। প্রবাসী আয় তথা রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থান চট্টগ্রামের।
আর চট্টগ্রামের পেছনেই রয়েছে সিলেট ও কুমিল্লা। এরপরই উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদী জেলার অবস্থান। এই চিত্র গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁরা পাঠান ২১৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এর আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা জেলায় ৫২৩ কোটি ডলার ও চট্টগ্রাম জেলায় ১৪২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসে। এই সময়ে সিলেট জেলায় ৮৭ কোটি, কুমিল্লায় ৮১ কোটি ও নোয়াখালীতে ৪৬ কোটি ডলার এসেছে। এ ছাড়া আলোচ্য সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ও নরসিংদীতে ২৫ কোটি ডলার আসে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলাগুলোতে যে পরিমাণ আয় আসছে, তার চেয়ে বেশি আসার কথা। কিন্তু অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়ে গেছেন, সে কারণে তা হচ্ছে না। তাঁরা বরং উল্টো দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এতে অর্থ পাচার বাড়ছে।
গত বছরের বেশির ভাগ সময়ে প্রবাসী আয় পরিস্থিতি খুব আশাপ্রদ ছিল না। শেষ দিকে এসে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করে। যেমন গত ডিসেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় আসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যা নভেম্বরে ছিল ১৯৩ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২ হাজার ১৯০ কোটি ডলার। তার আগের বছরে, অর্থাৎ ২০২২ সালে এসেছিল ২ হাজার ১৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ৩ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার, ২০২০ সালে ২ হাজার ১৭৩ কোটি ডলার এবং ২০১৯ সালে ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে।
প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোয় এখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা। তবে ডলার-সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এর চেয়ে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে। এ কারণে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়ছে। আবার দেশ থেকে পাচার করা অর্থ কেউ কেউ প্রবাসী আয় হিসেবে দেখিয়ে ফেরত আনছেন বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময়-সময় বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট।
ডলার-সংকটের কারণে গত বছর এটির দাম নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনা, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপরও গত বছরের বেশির ভাগ সময় বৈধ পথে প্রবাসী আয় কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। ব্যাংকগুলো অবশ্য এখন সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে। (প্রথম আলো)

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours