মাটির নিচে ১৮ তলা বিল্ডিং ঘেরা শহর, আছে স্কুল কুয়া ও গির্জা!

Spread the love

মাটির নিচে ১৮ তলার শহরে ছিল স্কুল, ছিলো গির্জা! মাটির নিচের এই ১৮ তলার শহরে একসঙ্গে থাকতে পারতেন আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ। ৮৫ মিটার গভীর এই শহরটি কেমাকলি নামের অন্য একটি ভূগর্ভস্থ শহরের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানান ইতিহাসবিদেরা। তাদের দাবি, ১৮ স্তরে বানানো ডেরিংকুয়ু শহরের মাটির তলায় দরজাগুলি শুধুমাত্র ভিতর থেকে বন্ধ করা যেত। বাইরে থেকে বন্ধ করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। হাওয়া-বাতাস যেন অবাধে যাতায়াত করতে পারে, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল। গির্জা, স্কুল, ওয়াইন মজুত রাখার বিশেষ ঘর থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ঘর! সবই ছিল এই শহরে। তবুও এ শহর পৃথিবীর অন্যান্য শহরের চেয়ে একদমই
আলাদা। কারণ মাটির উপর নয়, বরং মাটির নীচে স্তরে স্তরে তৈরি হয়েছিল এই শহর। মাটির উপরে নয়, এ শহর গড়ে উঠেছিল ভুমির অভ্যন্তরে অনেক ভিতরে।
প্রাচীন তুরস্কে ২০০টিরও বেশি ভূগর্ভস্থ শহর রয়েছে। সেগুলির মধ্যে ৪৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই শহরটিই সবচেয়ে বড় বলে মনে করা হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, অষ্টম থেকে সপ্তম খ্রিস্ট পূর্বাব্দের মধ্যে গ্রিক অধিবাসীরা এই শহর গড়ে তোলেন। তৎকালীন পারস্যের রাজা ইমার রাজত্বকালে মাটির তলায় শহরটি নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধের সময় শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে এই ভূগর্ভস্থ শহর গড়ে তোলা হয়। বাইজান্টাইন যুগে আরব মুসলিমদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ভূগর্ভস্থ শহরে আশ্রয় নিতেন বাসিন্দারা। ১৮ তলার এই শহরে মূলত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে রাখা হত। কালের নিয়মে এই শহরটি ধীরে ধীরে মাটির তলায় চাপা পড়ে যায়। ১৯৬৩ সালে এই শহরটির অস্তিত্বের কথা প্রকাশ্যে আসে। সেখানকার এক স্থানীয় ওই এলাকায় বাড়ি তৈরি করবেন বলে মাটি খুঁড়ছিলেন। তখন তাঁর পোষ্য মুরগি হারিয়ে যায়। মুরগির খোঁজ করতে গিয়ে একটি গর্তের সন্ধান পান তিনি। গর্তের ভিতর মুরগিটি পড়ে গিয়েছে বলে তা খুঁড়তে শুরু করেন। গর্ত খুঁড়ে নীচে নামার পর তিনি দেখেন গর্তের ভিতর অসংখ্য সরু রাস্তা রয়েছে। তার পরেই শুরু হয়ে যায় হইচই। শহরের ধ্বংসাবশেষ পর্যবেক্ষণ করে তারা জানিয়েছেন, ১৮ তলার শহরে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ থাকতে পারতেন। শহরের দ্বিতীয় তলায় স্কুল ছিল।ু শহরের তৃতীয় এবং চতুর্থ তলা থেকে ধাপে ধাপে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গিয়েছে পাঁচ তলায়। সেখানে ছিল একটি গির্জা। শহরের মাঝে ছিল একটি কুয়ো। ৫৫ মিটার গভীর কুয়ো থেকে জল সংগ্রহ করতেন শহরের বাসিন্দারা। গৃহপালিত পশু রাখার জায়গাও ছিল আলাদা। বর্তমানে শহরটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। টিকিট কেটে পর্যটকেরা ইতিহাসে ঘেরা এই শহর দেখতে ভিড় জমান।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours