মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ স্মৃতি স্তম্ভ পরিদর্শন করলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Spread the love


রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস॥

মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় অবস্থিত স্মৃতি স্তম্ভ পরিদর্শন করলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া। একটি আনন্দ ভ্রমণ- আড্ডার নেতৃত্বে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার এবং কবিতা বিষয়ক গবেষকন জনাব মোঃ আঃ কুদদূস। ৩৬ জনের এই সংস্কৃতিপ্রেমিদের পথপ্রদর্শক হিসেবে আমাদের সাথে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন।
সকাল ১০টায় একটি বাস যোগে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরভার সামনে থেকে রওয়ানা করি। কনকনে শীতে সবার সাথেই ছিলো বাড়তি শীতের কাপড়। বাস ছাড়ার পরপরই নাশতা-পানি হাতে এসে পৌঁছলো। নাশতা খেতে খেতে সরাইলের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম। ঘন্টা দুয়েক সময় লাগেনি, আমরা তখন সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সামনে। বাস থেকে নেমে অবাক। মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই। কারোরই না। কেউ কেউ চলে গেলো ওয়াচ টাওয়ার থেকে বনের পশুপাখি দেখতে। আমরা কয়েকজন গেস্ট হাউজে ফ্রেশ হতে গেলাম। যাওয়ার পথে একটি উঁচু জায়গা পার হতে হলো। ঢালু এই জায়গাটি কম করে হলেও ছয় তলার সমান। এসময় ঘটলো মজার কিছু ঘটনা। মোবাইল ফোন আর টিভিতে জীবজন্তু দেখে অভ্যস্ত চোখে ধরা পড়লো শতশত ছোট প্রজাতির বানর। খাবারের জন্য চিৎকার চ্যাঁচামেচি করছে। এ ডাল থেকে ও ডালে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। আশেপাশে খাবারের জন্য কোনো কিছু দেখলাম না। তবে কষ্ট পেলাম এদের খাবারের জন্য কোনো উৎস চোখে না পড়ার কারণে। আরও অবাক হলাম আশে পাশের কোথাও পশুপাখিদের খাবার পানির কোনো উৎস না দেখে।

রুমে গিয়ে অজু করে চলে গেলাম মসজিদে। নামাজ শেষে দেশি মুরগি ছোট মাছ সবজি আর ডাল দিয়ে চমৎকার ভুড়িভোজ সবাইকে আন্দোলিত করলো। খাবার শেষে আবার গেস্ট হাউজে। লটারির টিকিট ক্রয় এবং কিছুক্ষণ পরই ফল ঘোষণা। যদিও সবাই স্বান্ত্বনা পুরষ্কার পেলো কিন্তু প্রথম পুরষ্কারটি কার ভাগ্যে তা জানা গেলো না। আরও মজার বিষয় তিনজন লটারি ক্রেতা প্রত্যেকেই দুটি করে পুরষ্কার পাওয়ায় সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত হলো।
সন্ধ্যার কিছু আগে আমরা গেলাম মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ কেন্দ্র হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় অবস্থিত স্মৃতি স্তম্ভ পরিদর্শন করতে। সেখানে গিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। সবাই মিলে ছবি তোলা হলো। সবচেয়ে ভালো লাগলো ত্রি নট ত্রি রাইফেলের গুলির আকৃতিতে অনেক বড় একটি স্মৃতিফলক। যা দেশি বিদেশী পর্যটকদেরকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করছে। পাশেই একটি বিল। বিলজুড়ে লাল পদ্ম হাসছে। এখানে সবাই ব্যস্ত ছবি তোলার কাজে। সাদা সাদা বক ওড়ে ওড়ে ফিরে যাচ্ছে নীড়ে। আমাদেরও সময় হলো নীড়ে ফেরার।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours