সরাইলে আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

Spread the love

ফ্রন্টিয়ার রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে যৌতুকের বলি হয়েছেন শাহিদা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূ। স্বামীর দেওয়া আগুনে ঝলসে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

আগুনে ঝলসে যেতে দেখে মাকে জড়িয়ে ধরায় দগ্ধ হয়েছে দেড় বছরের মেয়ে আলিফা। বাদ যায়নি ঘাতক স্বামী আলামিনও। বর্তমানে সেও ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে ওই গৃহবধূ মারা যান। শাহিদার মরদেহ রাতে গ্রামে দাফন করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার সকালে উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আল-আমীনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি।

পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আট বছর আগে উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আলাই মুন্সির মেয়ে শাহিদা আক্তারের সঙ্গে মধ্যপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে আল-আমীনের বিয়ে হয়। তারা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে আল-আমীনের পরিবার বিয়ে মেনে নিতে না চাইলেও পরে যৌতুক পেয়ে মেনে নেয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিয়ের পর আল-আমীনকে যৌতুক দেওয়া হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। এ টাকায় আল-আমীন মধ্যপ্রাচ্যে যান। তিন বছর আগে দেশে ফিরে তিনি ভবঘুরে স্বভাবের হয়ে পড়েন। টাকার অভাব হলেই তিনি স্ত্রীকে মারধর করতেন। শাহিদার পরিবার থেকে একাধিকবার টাকা দেওয়া হয়েছে। শাহিদাকে নিয়মিত মারধরের কারণে গ্রামে একাধিকবার সালিশও হয়েছে।

সোমবার সকালে টাকার জন্য শাহিদাকে মারধর করতে থাকেন আল-আমীন। একপর্যায়ে নিজের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রল বের করে শাহিদার গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ শাহিদা যখন চিৎকার করছিলেন, তখন তার দেড় বছরের শিশু আলিফাও চিৎকার দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। এতে শিশু আলিফা দগ্ধ হয়। নিজের দেওয়া আগুনে আল-আমীনও দগ্ধ হন। গ্রামের লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তিনজনকেই সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মামলার বাদী শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি বলেন, যৌতুকের জন্য পাষণ্ড আল-আমীন আমার বোনকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। আমরা তার ফাঁসি চাই।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধ আল-আমীন শঙ্কামুক্ত হলেও তার মেয়ে শঙ্কামুক্ত নয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। পুলিশের নজরদারিতে আল-আমীনের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

About The Author

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours